পশ্চিমাদের তুলনায় তিন গুণ অস্ত্র উৎপাদন করছে রাশিয়া

যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের তুলনায় প্রায় তিন গুণ গোলাবারুদ উৎপাদনের পথে রয়েছে রাশিয়া। চলতি বছরের শেষ নাগাদ ইউক্রেনে বড় ধরনের আরেকটি হামলা চালাতে পারে রাশিয়া। এ লক্ষ্যে গোলাবারুদের উৎপাদন বাড়াতে শুরু করেছে মস্কো। তাদের এ উদ্যোগ যুদ্ধের ময়দানে সেনাদের বড় ধরনের সুবিধা দেবে বলে মনে করা হচ্ছে।

ন্যাটোর গোয়েন্দাদের বরাতে সিএনএন বলছে, প্রতি মাসে প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার গোলাবারুদ উৎপাদন করছে রাশিয়া। বছরে যা প্রায় ৩০ লাখের কাছাকাছি। অন্যদিকে ইউরোপের এক জ্যেষ্ঠ গোয়েন্দা কর্মকর্তার দাবি, কিয়েভে পাঠানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বছরে মাত্র ১২ লাখ গোলাবারুদ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে।

মার্কিন সশস্ত্র বাহিনী ২০২৫ সালের শেষ নাগাদ প্রতি মাসে ১ লাখ গোলাবারুদ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। মাসিক হিসাবে এই সংখ্যা রাশিয়ার অর্ধেক। আর যুক্তরাষ্ট্রে আদৌ এই পরিমাণ গোলাবারুদ উৎপাদন সম্ভব কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছেন এক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা। এর সংশয়ের কারণ, বর্তমানে মার্কিন কংগ্রেসে ইউক্রেনের জন্য ছয় হাজার কোটি ডলারের তহবিল স্থগিত হয়ে যাওয়ার বিষয়টি।

পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোর একজন একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা সিএনএনকে বলেন, আমরা এখন যেটা করছি, সেটা আসলে অস্ত্র উৎপাদনের একটি যুদ্ধ। ইউক্রেনের ভাগ্যে কী ঘটবে তা নির্ভর করছে কীভাবে প্রতিটি পক্ষ এই যুদ্ধ পরিচালনার জন্য প্রস্তুত।

পশ্চিমা কর্মকর্তারা বলছেন, রাশিয়া ইউক্রেনে বর্তমানে প্রতিদিন প্রায় ১০ হাজার গোলা নিক্ষেপ করছে। যেখানে ইউক্রেনের পক্ষ থেকে দিনে মাত্র দুই হাজার গোলা নিক্ষেপ করা হচ্ছে।

ইউরোপের একজন গোয়েন্দা কর্মকর্তার তথ্য অনুযায়ী, সম্মুখ সমরের ৬০০ মাইলজুড়ে উভয় বাহিনী মুখোমুখি রয়েছে। তবে তাদের গোলা নিক্ষেপের অনুপাত করুন। অর্থাৎ সীমান্ত এলাকার যুদ্ধে ইউক্রেনীয় বাহিনী রুশ বাহিনীর চেয়ে কম গোলা নিক্ষেপ করতে পারছে।

বছরে প্রায় ৩০ লাখের কাছাকাছি গোলাবারুদ উৎপাদন করছে রাশিয়া। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের বছরে মাত্র ১২ লাখ গোলাবারুদ উৎপাদনের সক্ষমতা।

২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে রুশ বাহিনী ইউক্রেনে হামলার পর থেকে ইউক্রেনে আর কখনো এতটা গোলার সংকট তৈরি হয়নি। ইউক্রেনকে অস্ত্র কেনার জন্য দেওয়া যুক্তরাষ্ট্রের অর্থ ফুরিয়ে গেছে এবং নতুন করে যে ৬৮ বিলিয়ন ডলারের সামরিক সহায়তার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে, তা কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদে আটকে গেছে।

এ পরিস্থিতিতে সম্প্রতি রাশিয়া ইউক্রেনের আভদিভকা শহরের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে  যা যুদ্ধক্ষেত্রে রুশ বাহিনীকে ব্যাপক অনুপ্রাণিত করে তুলেছে বলে মনে হচ্ছে। এখন ইউক্রেন শুধু গোলাবারুদ নয়, সেনাঘাটতির মধ্যেও পড়ে গেছে।

সাম্প্রতিক দেশকাল ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করুন

মন্তব্য করুন

Epaper

সাপ্তাহিক সাম্প্রতিক দেশকাল ই-পেপার পড়তে ক্লিক করুন

Logo

ঠিকানা: ১০/২২ ইকবাল রোড, ব্লক এ, মোহাম্মদপুর, ঢাকা-১২০৭

© 2024 Shampratik Deshkal All Rights Reserved. Design & Developed By Root Soft Bangladesh

// //